বর্তমান ডিজিটাল যুগে ঘরে বসে অনলাইনে টাকা ইনকাম করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম, সার্ভে সাইট, অ্যাড দেখা, কনটেন্ট রাইটিং, ডাটা এন্ট্রি কিংবা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট থেকে সহজেই আয় করা সম্ভব।বিশেষ করে Upwork, Fiverr, Freelancer, Clickworker, Swagbucks, Amazon Affiliate ইত্যাদি জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত সাইটগুলো ব্যবহার করে অনেকেই মাসিক ভালো ইনকাম করছেন।
এসব সাইটে কাজ করতে আপনার কেবল ইন্টারনেট সংযোগ, কিছু স্কিল এবং নিয়মিত সময় দেওয়ার ইচ্ছা থাকলেই যথেষ্ট।
কোন সাইট থেকে টাকা ইনকাম করা যায়?
নিম্নে কোন সাইট থেকে টাকা ইনকাম করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
১. Upwork
Upwork হলো একটি গ্লোবাল ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস যেখানে লক্ষ লক্ষ ক্লায়েন্ট এবং ফ্রিল্যান্সার একসাথে যুক্ত থাকে। এখানে কাজ পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রফাইল তৈরি করে আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজের জন্য আবেদন করতে হয়।
লেখালেখি, প্রোগ্রামিং, ডিজাইন, ডেটা এন্ট্রি, ডিজিটাল মার্কেটিংসহ প্রায় সব ধরনের কাজই এখানে পাওয়া যায়। নতুন থেকে শুরু করে অভিজ্ঞ সবার জন্যই এটি একটি আয়ের চমৎকার মাধ্যম।
২. Fiverr
Fiverr হলো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি নিজের সার্ভিস “গিগ” আকারে বিক্রি করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, লোগো ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং, ভয়েসওভার, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি কাজ আপনি $5 থেকে শুরু করে বিক্রি করতে পারেন।
এখানে কাজের জন্য আলাদা করে আবেদন করতে হয় না, বরং ক্লায়েন্টরা আপনার প্রোফাইল দেখে সরাসরি অর্ডার করে। ফলে এটি নতুনদের জন্য বেশ সহজ একটি ইনকাম সোর্স।
৩. Freelancer.com
ইহা হলো একটি পুরনো ও জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্স সাইট। এখানে ক্লায়েন্টরা কাজ পোস্ট করে, আর ফ্রিল্যান্সাররা বিড করে সেই কাজ পাওয়ার চেষ্টা করে।
প্রতিযোগিতা বেশি থাকলেও যারা ভালো প্রোফাইল ও রিভিউ তৈরি করতে পারে তারা নিয়মিত আয় করতে পারে। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার, কনটেন্ট রাইটিং, ডিজাইনসহ সব ধরনের কাজ এখানে পাওয়া যায়।
৪. PeoplePerHour
ইহা মূলত ইউরোপ ভিত্তিক একটি প্ল্যাটফর্ম হলেও সারা বিশ্বের মানুষ এখানে কাজ করছে। এর বিশেষ দিক হলো, এখানে ঘণ্টাভিত্তিক এবং প্রজেক্ট ভিত্তিক উভয়ভাবে কাজ করা যায়।
আপনি চাইলে ছোট ছোট কাজ দ্রুত শেষ করে আয় করতে পারেন। এটি মূলত সৃজনশীল এবং টেকনিক্যাল কাজের জন্য বিখ্যাত।
৫. Toptal
ইহা হলো একটি প্রিমিয়াম ফ্রিল্যান্সিং সাইট যা মূলত এক্সপার্টদের জন্য তৈরি। এখানে ঢুকতে হলে কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় এবং কেবলমাত্র দক্ষতার প্রমাণ দিতে পারলেই আপনি কাজ পাবেন।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ফাইন্যান্স, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিজাইন ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা এখানে কাজ করেন এবং আয়ও তুলনামূলক বেশি হয়।
৬. Guru
ইহা হলো একটি সাইট যেখানে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের পোর্টফোলিও প্রদর্শন করে এবং ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে কাজ পেতে পারে। এটি ছোট ও বড় উভয় ধরণের প্রজেক্টের জন্য জনপ্রিয়।
সহজ ইন্টারফেস, নিরাপদ পেমেন্ট সিস্টেম এবং বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাজের কারণে এটি অনেক ফ্রিল্যান্সারের কাছে পছন্দের জায়গা।
৭. 99Designs
যারা গ্রাফিক ডিজাইন বা লোগো ডিজাইনে দক্ষ তাদের জন্য ইহা একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম। এখানে ক্লায়েন্টরা কনটেস্ট আয়োজন করে, আর ডিজাইনাররা তাদের কাজ জমা দেয়।
যে ডিজাইনটি ক্লায়েন্টের সবচেয়ে ভালো লাগে সেটিই বিজয়ী হয় এবং সে ইনকাম করে। এটি মূলত ক্রিয়েটিভ ডিজাইনারদের জন্য সেরা প্ল্যাটফর্ম।
৮. TaskRabbit
ইহা হলো একটু ভিন্নধর্মী প্ল্যাটফর্ম যেখানে অনলাইন ও অফলাইন উভয় ধরনের কাজ পাওয়া যায়। যেমনঃ ডেলিভারি, গৃহস্থালির ছোট কাজ, শপিং সার্ভিস কিংবা অনলাইন সহায়তা।
যারা টাস্ক সম্পন্ন করতে ভালোবাসেন এবং দ্রুত কাজ শেষ করতে সক্ষম তারা সহজেই এই সাইট থেকে আয় করতে পারেন।
৯. Microworkers
ইহা হলো এমন একটি সাইট যেখানে ছোট ছোট কাজ সম্পন্ন করে টাকা আয় করা যায়। যেমন: ডেটা এন্ট্রি, সার্ভে ফিলআপ, ওয়েবসাইট টেস্টিং, অ্যাপ ডাউনলোড ইত্যাদি।
প্রতিটি কাজের জন্য সামান্য অংকের টাকা পাওয়া যায় কিন্তু কাজগুলো দ্রুত শেষ করা যায় বলে দিনে অনেকগুলো কাজ করে ভালো আয় সম্ভব।
১০. Amazon Mechanical Turk (MTurk)
ইহা হলো অ্যামাজনের তৈরি একটি মাইক্রো-টাস্কিং প্ল্যাটফর্ম। এখানে ছোটখাটো কাজ যেমন সার্ভে করা, ইমেজ ট্যাগিং, ডেটা সংগ্রহ, অডিও ট্রান্সক্রিপশন ইত্যাদি করে টাকা ইনকাম করা যায়। যদিও আয় খুব বেশি নয়, তবে নিয়মিত কাজ করলে মাসে একটি ভালো অংকের সাইড ইনকাম করা সম্ভব।
১১. Clickworker
ইহা একটি মাইক্রো-টাস্কিং প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি ছোট ছোট কাজ করে আয় করতে পারবেন। যেমন: টেক্সট লেখা, ওয়েবসাইট টেস্টিং, ডেটা ক্যাটাগরাইজ করা কিংবা অ্যাপ টেস্টিং।
প্রতিটি কাজের জন্য সামান্য অংকের টাকা পাওয়া যায়, তবে নিয়মিত কাজ করলে একটি ভালো সাইড ইনকাম হয়।
১২. Appen
ইহা মূলত AI ও মেশিন লার্নিং ডেটা প্রজেক্টের জন্য ফ্রিল্যান্সার নিয়োগ করে। এখানে ট্রান্সক্রিপশন, ডেটা সংগ্রহ, লেবেলিং, ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং ইত্যাদি কাজ পাওয়া যায়। যারা ভাষাগত দক্ষ বা কম্পিউটার ব্যবহারে পারদর্শী তারা সহজেই এখানে ইনকাম করতে পারেন।
১৩. Remotasks
ইহা হলো একটি জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেখানে ছবি লেবেলিং, ট্রান্সক্রিপশন, ডেটা অ্যানোটেশন ইত্যাদি কাজ করা হয়।
মূলত AI কোম্পানিগুলোর জন্য ডেটা সাজানোই এই প্ল্যাটফর্মের কাজ। এখানে সঠিকভাবে কাজ করলে দ্রুত পেমেন্ট পাওয়া যায় এবং নতুনদের জন্যও সুযোগ থাকে।
১৪. Rev
ইহা হলো একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেখানে মূলত অডিও বা ভিডিওকে টেক্সটে রূপান্তর (ট্রান্সক্রিপশন) করে আয় করা যায়। যারা ইংরেজিতে ভালো, তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার সুযোগ। এছাড়া সাবটাইটেল বানানো বা অনুবাদের মতো কাজও এখানে পাওয়া যায়।
১৫. UserTesting
ইহা হলো একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ বা ডিজিটাল পণ্যের রিভিউ দিয়ে টাকা আয় করা যায়।
এখানে কাজের ধরণ হলো ওয়েবসাইট ব্যবহার করে নিজের অভিজ্ঞতা ভিডিও আকারে শেয়ার করা। প্রতিটি টেস্ট শেষে নির্দিষ্ট ডলার আয় হয়।
১৬. InboxDollars
ইহা একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেখানে ছোট কাজ, সার্ভে, ভিডিও দেখা, অ্যাপ টেস্টিং ইত্যাদি করে ইনকাম করা যায়। এটি বিশেষত মার্কিন ব্যবহারকারীদের কাছে জনপ্রিয়, তবে অন্যান্য দেশ থেকেও কিছু কাজ করা যায়। নিয়মিত ব্যবহার করলে ছোটখাটো সাইড ইনকাম হয়।
১৭. Swagbucks
ইহা হলো একটি বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্ম যেখানে সার্ভে পূরণ, ভিডিও দেখা, অনলাইন শপিং বা সার্চিং করে “SB পয়েন্ট” পাওয়া যায়। পরে এই পয়েন্টগুলো ডলার বা গিফট কার্ডে রূপান্তর করা যায়। যারা পার্ট-টাইমে সহজভাবে অনলাইন ইনকাম করতে চান তাদের জন্য এটি ভালো অপশন।
১৮. Prolific
ইহা মূলত একাডেমিক ও রিসার্চ সার্ভে সম্পন্ন করার প্ল্যাটফর্ম। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষকরা বিভিন্ন সার্ভে পোস্ট করে এবং ইউজাররা সেগুলো পূরণ করে টাকা ইনকাম করে। পেমেন্ট সাধারণত PayPal-এর মাধ্যমে দেওয়া হয় এবং কাজগুলো তুলনামূলক সহজ।
১৯. Lionbridge (RaterHub)
ইহা মূলত সার্চ ইঞ্জিন ইভ্যালুয়েটর ও ডেটা অ্যানোটেশন প্রজেক্টের জন্য পরিচিত। এখানে সার্চ রেজাল্ট বিশ্লেষণ করে বা ডেটা টেস্টিং করে ইনকাম করা যায়। দীর্ঘমেয়াদি স্থায়ী প্রজেক্ট পাওয়া গেলে মাসে ভালো অংকের আয় করা সম্ভব।
২০. ClickBank
ইহা হলো একটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি ডিজিটাল পণ্য প্রচার করে কমিশন ইনকাম করতে পারেন। যারা ব্লগিং, ইউটিউব বা সোশ্যাল মিডিয়ায় কাজ করেন তাদের জন্য এটি বিশেষভাবে লাভজনক। নতুনদের জন্যও সহজে শুরু করা যায়।
২১. FlexJobs
ইহা হলো রিমোট ও ফ্লেক্সিবল চাকরির জন্য একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। এখানে পার্ট-টাইম ও ফুল-টাইম উভয় ধরনের কাজ পাওয়া যায়। ডেটা এন্ট্রি, কাস্টমার সার্ভিস, রাইটিং, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টসহ বিভিন্ন ধরনের অনলাইন কাজের সুযোগ রয়েছে।
২২. DesignCrowd
যারা গ্রাফিক ডিজাইনে দক্ষ তাদের জন্য DesignCrowd একটি ভালো প্ল্যাটফর্ম। এখানে ক্লায়েন্টরা ডিজাইনের কাজ পোস্ট করে এবং ডিজাইনাররা তাদের কাজ জমা দেয়। কনটেস্ট ভিত্তিক হওয়ায় সেরা ডিজাইন বেছে নেওয়া হয় এবং বিজয়ী টাকা ইনকাম করে।
২৩. OneSpace
ইহা হলো একটি মাইক্রো-জব সাইট যেখানে ছোট ছোট টাস্ক সম্পন্ন করে আয় করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে কনটেন্ট রাইটিং, প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন লেখা, ডেটা অ্যানোটেশন ইত্যাদি। কাজ সহজ এবং দ্রুত শেষ করা যায় বলে নতুনদের জন্য উপযুক্ত।
২৪. Spare5 (Mighty AI)
ইহা হলো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে ছোট কাজ যেমন ছবি ট্যাগ করা, ভয়েস রেকগনিশন টেস্ট করা বা ডেটা লেবেলিং করে ইনকাম করা যায়। এটি মূলত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রজেক্টের জন্য ডেটা তৈরি করে।
২৫. RapidWorkers
ইহা হলো মাইক্রো টাস্ক প্ল্যাটফর্ম যেখানে ফ্রিল্যান্সাররা বিভিন্ন ছোটখাটো অনলাইন কাজ করে ইনকাম করতে পারে। যেমনঃ ওয়েবসাইট ভিজিট করা, লাইক/ফলো দেওয়া, সার্ভে পূরণ ইত্যাদি। যদিও পেমেন্ট কম, তবে সহজ কাজ হওয়ায় দ্রুত আয় করা সম্ভব।
২৬. Timebucks
ইহা একটি অল-ইন-ওয়ান ইনকাম প্ল্যাটফর্ম যেখানে সার্ভে করা, বিজ্ঞাপন দেখা, টিকটক/ইউটিউব টাস্ক, ডেটা এন্ট্রি, এমনকি অনলাইন ভোটিংয়েও ইনকাম করা যায়। বাংলাদেশ থেকেও এটি ব্যবহার করা যায় এবং সরাসরি Payoneer এর মাধ্যমে টাকা তোলা সম্ভব।
২৭. ySense
এটি একটি জনপ্রিয় সার্ভে ও মাইক্রো-টাস্ক সাইট। এখানে আপনি অনলাইন সার্ভে পূরণ, ছোট কাজ সম্পন্ন, অফার কমপ্লিট করে আয় করতে পারবেন। PayPal, Payoneer এর মাধ্যমে টাকা তোলা যায়।
২৮. Neobux
ইহা হলো একটি পুরনো PTC (Paid-to-Click) সাইট যেখানে বিজ্ঞাপন ক্লিক করে আয় করা যায়। যদিও আয় তুলনামূলক কম, তবে নিয়মিত করলে ও রেফারেল ব্যবহার করলে ভালো অংকের টাকা ইনকাম সম্ভব।
২৯. Toloka (Yandex)
ইহা হলো ইয়ানডেক্স-এর তৈরি একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। এখানে ডেটা অ্যানোটেশন, সার্ভে, ছবি ট্যাগিং ইত্যাদি ছোট কাজের মাধ্যমে ইনকাম করা যায়। কাজগুলো সহজ এবং মোবাইল দিয়েও সম্পন্ন করা সম্ভব।
৩০. TesterWork
ইহা হলো একটি ইউজার টেস্টিং প্ল্যাটফর্ম যেখানে নতুন অ্যাপ, গেম, বা ওয়েবসাইট টেস্ট করে আয় করা যায়। যারা টেকনোলজি সম্পর্কে ধারণা রাখে এবং অ্যাপ ব্যবহার করতে পছন্দ করে তাদের জন্য এটি চমৎকার একটি সাইড ইনকাম সোর্স।
৩১. ClickSense Research
ইহা হলো একটি সার্ভে প্ল্যাটফর্ম যেখানে বিভিন্ন মার্কেট রিসার্চ কোম্পানির প্রশ্নমালা পূরণ করে টাকা ইনকাম করা যায়। এখানে প্রতিটি সার্ভে নির্দিষ্ট অংকের পেমেন্ট দেয় এবং সার্ভে শেষ হলে সরাসরি আপনার অ্যাকাউন্টে যুক্ত হয়।
৩২. CrowdSpring
ইহা হলো একটি ক্রিয়েটিভ প্ল্যাটফর্ম যেখানে লোগো ডিজাইন, গ্রাফিকস, ওয়েবসাইট থিম ডিজাইন ইত্যাদি কাজ পাওয়া যায়। ক্লায়েন্টরা প্রজেক্ট পোস্ট করে, আর ডিজাইনাররা প্রস্তাব জমা দেয়। বিজয়ী ডিজাইন নির্বাচিত হলে আপনি টাকা পাবেন।
৩৩. WeLocalize
ইহা মূলত ভাষা ও অনুবাদভিত্তিক কাজের জন্য জনপ্রিয়। এখানে আপনি ট্রান্সলেশন, ট্রান্সক্রিপশন এবং লোকালাইজেশন প্রজেক্টে কাজ করতে পারবেন। যারা একাধিক ভাষায় দক্ষ তাদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ।
৩৪. Scribie
ইহা হলো একটি ট্রান্সক্রিপশন প্ল্যাটফর্ম যেখানে অডিওকে লিখিত টেক্সটে রূপান্তর করে ইনকাম করা যায়। এখানে প্রতি অডিও মিনিটের জন্য নির্দিষ্ট ডলার দেওয়া হয়। যারা ইংরেজিতে সাবলীল তারা খুব সহজে এখানে আয় করতে পারবেন।
৩৫. Respondent.io
ইহা হলো একটি সার্ভে ও রিসার্চ প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি বিশেষ ধরনের রিসার্চ স্টাডিতে অংশগ্রহণ করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এখানে প্রতি স্টাডির জন্য তুলনামূলক বেশি আয় হয়, অনেক সময় $৫০-$২০০ পর্যন্ত পেমেন্ট মেলে।
৩৬. Userlytics
ইহা হলো একটি ইউজার এক্সপেরিয়েন্স টেস্টিং প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি ওয়েবসাইট ও অ্যাপ টেস্ট করে রিভিউ দেন। প্রতিটি টেস্টের জন্য ভিডিও ফিডব্যাক জমা দিতে হয়। প্রতিটি টেস্টে সাধারণত $১০-$২০ পর্যন্ত ইনকাম করা যায়।
৩৭. Validately
ইহা মূলত ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ টেস্টিং প্ল্যাটফর্ম। এখানে ডেভেলপাররা নতুন প্রজেক্ট রিলিজ করার আগে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা জানতে চায়। আপনার ফিডব্যাকের বিনিময়ে টাকা পাওয়া যায়। এটি পার্ট-টাইম ইনকামের জন্য ভালো।
৩৮. Testbirds
ইহা হলো ইউরোপ-ভিত্তিক একটি জনপ্রিয় ইউজার টেস্টিং সাইট। এখানে মোবাইল অ্যাপ, ওয়েবসাইট ও সফটওয়্যার টেস্ট করে ফিডব্যাক দিতে হয়।
প্রতিটি টেস্টের জন্য ভালো অংকের টাকা পাওয়া যায়। যারা নতুন টেকনোলজি ব্যবহার করতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এটি উপযুক্ত।
৩৯. RespondentPanel
ইহা মূলত বিভিন্ন রিসার্চ স্টাডি সম্পন্ন করার একটি প্ল্যাটফর্ম। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়, বড় কোম্পানি এবং গবেষকরা বিভিন্ন প্রশ্নমালা বা ইন্টারভিউ নেয়। অংশগ্রহণকারীরা এর বিনিময়ে অর্থ পেয়ে থাকেন।
৪০. Appen Contributor
ইহা একটি মাইক্রো টাস্কিং সাইট। এখানে ছবি ট্যাগিং, কন্টেন্ট মডারেশন, ডেটা টেস্টিং ইত্যাদি ছোট কাজ করে ইনকাম করা যায়। নতুনদের জন্য এটি বেশ উপযুক্ত কারণ কাজগুলো সহজ এবং দ্রুত শেখা যায়।
৪১. Skillshare
ইহা হলো একটি অনলাইন লার্নিং ও টিচিং প্ল্যাটফর্ম। আপনি যদি কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষ হন, তবে এখানে ভিডিও কোর্স তৈরি করে আপলোড করতে পারবেন। শিক্ষার্থীরা যখন আপনার কোর্স দেখে, তখন আপনি রয়্যালটি বা আয়ের অংশ পাবেন।
৪২. Udemy
ইহা হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় অনলাইন কোর্স মার্কেটপ্লেস। এখানে আপনি নিজের স্কিল শেয়ার করে কোর্স বানাতে পারেন এবং তা বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারবেন। যারা পড়ানো বা ট্রেনিং দিতে ভালোবাসেন তাদের জন্য এটি একটি দারুণ সুযোগ।
৪৩. Chegg Tutors
ইহা হলো একটি অনলাইন টিউটরিং প্ল্যাটফর্ম। এখানে আপনি ছাত্রদের বিভিন্ন বিষয়ে পড়াতে পারবেন এবং ঘণ্টাভিত্তিক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান বা অন্য কোনো বিষয়ে দক্ষ হলে এটি আপনার জন্য আদর্শ।
৪৪. StudyPool
ইহা হলো এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন করে এবং আপনি উত্তর দিয়ে টাকা আয় করতে পারেন। এটি মূলত হোমওয়ার্ক সহায়তা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পরিচিত। যারা পড়াশোনায় ভালো এবং অন্যকে শেখাতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এটি উপযুক্ত।
৪৫. Textbroker
ইহা হলো কনটেন্ট রাইটিং-এর জন্য একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। এখানে ক্লায়েন্টরা আর্টিকেল বা ব্লগ পোস্টের অর্ডার দেয়, আর আপনি লিখে ইনকাম করতে পারেন। লেখার মান যত ভালো হবে, ইনকামের পরিমাণও তত বেশি হবে।
৪৬. iWriter
ইহা হলো একটি সহজ কনটেন্ট রাইটিং প্ল্যাটফর্ম যেখানে নতুনরাও লিখে আয় করতে পারে। এখানে ছোট আর্টিকেল বা ব্লগ পোস্ট লিখে দ্রুত পেমেন্ট পাওয়া যায়। লেখালেখি শুরু করতে চান এমনদের জন্য এটি ভালো জায়গা।
৪৭. Constant Content
ইহা হলো একটি প্রিমিয়াম কনটেন্ট মার্কেটপ্লেস। এখানে আপনি বিভিন্ন বিষয়ে আর্টিকেল লিখে বিক্রি করতে পারেন। দাম সাধারণত অন্য প্ল্যাটফর্মের তুলনায় বেশি, তাই ভালো মানের লেখকরা এখানে ভালো আয় করতে পারে।
৪৮. ProBlogger Jobs
ইহা হলো ব্লগ রাইটিং এবং কনটেন্ট রাইটিংয়ের জন্য জনপ্রিয় একটি জব বোর্ড। এখানে ওয়েবসাইট মালিকরা লেখক খোঁজে, আর আপনি তাদের জন্য আর্টিকেল লিখে টাকা আয় করতে পারেন। যারা ব্লগিংয়ে দক্ষ তাদের জন্য এটি বিশেষভাবে কার্যকর।
৪৯. Medium Partner Program
ইহা একটি ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম, আর এর Partner Program এ যোগ দিলে আপনি লেখার মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবেন। আপনার আর্টিকেল যত বেশি পাঠক পড়বে ও সময় ব্যয় করবে, তত বেশি ইনকাম আসবে।
৫০. Vocal Media
ইহা হলো ব্লগ ও আর্টিকেল লেখার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম। এখানে আপনি বিভিন্ন বিষয়ে লেখা প্রকাশ করতে পারবেন এবং পাঠক সংখ্যা ও ভিউ অনুযায়ী ইনকাম হবে। এটি নতুনদের জন্যও সহজে শুরু করার একটি মাধ্যম।
৫১. Shutterstock
ইহা হলো একটি বিশ্বখ্যাত স্টক ফটো ও ভিডিও প্ল্যাটফর্ম। আপনি যদি ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফি বা গ্রাফিক্স ডিজাইনে দক্ষ হন, তবে এখানে আপনার ছবি ও ভিডিও আপলোড করে বিক্রি করতে পারবেন। প্রতিবার কোনো ব্যবহারকারী আপনার ছবি কিনলে আপনি রয়্যালটি ইনকাম পাবেন।
৫২. Adobe Stock
ইহা হলো আরেকটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি ফটো, ভিডিও, ভেক্টর, ইলাস্ট্রেশন বিক্রি করতে পারেন। Adobe Creative Cloud ব্যবহারকারীরা এখানে কনটেন্ট কিনে থাকে, তাই আপনার কাজের বিক্রির সম্ভাবনা অনেক বেশি।
৫৩. iStock (Getty Images)
ইহা হলো Getty Images ওয়েবসাইটের একটি সাবসিডিয়ারি। এখানে ছবি, ভিডিও এবং গ্রাফিকস বিক্রি করে ভালো ইনকাম করা যায়। যারা পেশাদার ফটোগ্রাফার বা ডিজাইনার তাদের জন্য এটি একটি আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম।
৫৪. Alamy
ইহা হলো একটি স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট যেখানে উচ্চমানের ছবি বিক্রি করা যায়। Shutterstock অথবা iStock এর তুলনায় এখানে রয়্যালটি রেট বেশি, ফলে প্রতিটি ছবির বিক্রিতে আপনি তুলনামূলক বেশি আয় পাবেন।
৫৫. Foap
ইহা হলো মোবাইল অ্যাপ-ভিত্তিক একটি প্ল্যাটফর্ম। এখানে আপনি আপনার মোবাইল দিয়ে তোলা ছবিগুলো আপলোড করে বিক্রি করতে পারবেন।
প্রতিটি ছবি বিক্রি হলে আপনার অ্যাকাউন্টে ডলার জমা হবে। সহজ ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় এটি নতুন ফটোগ্রাফারদের জন্য উপযুক্ত।
৫৬. Dreamstime
ইহা হলো একটি বড় স্টক ফটো মার্কেটপ্লেস যেখানে ছবি, ইলাস্ট্রেশন এবং ভিডিও বিক্রি করা যায়। এটি নতুনদের জন্যও উন্মুক্ত এবং রয়্যালটির হারও তুলনামূলক ভালো।
৫৭. 123RF
ইহা হলো স্টক কনটেন্ট বিক্রির আরেকটি প্ল্যাটফর্ম। এখানে ফটোগ্রাফাররা ছবি বিক্রি করে ইনকাম করতে পারেন। এছাড়া গ্রাফিক ডিজাইনার ও ইলাস্ট্রেটরদের কাজেরও এখানে ভালো চাহিদা রয়েছে।
৫৮. Canva Contributor
ইহা প্রোগ্রামের মাধ্যমে আপনি আপনার ডিজাইন, টেমপ্লেট বা গ্রাফিক্স Canva প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করতে পারবেন। Canva-র বিশাল ব্যবহারকারী বেস থাকায় আপনার ডিজাইনের বিক্রির সম্ভাবনা অনেক বেশি।
৫৯. EyeEm
ইহা হলো একটি ফটো-সেলিং প্ল্যাটফর্ম। এটি শুধু মার্কেটপ্লেস নয়, বরং একটি ফটোগ্রাফি কমিউনিটি। এখানে আপনার ছবি বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও কোম্পানি কিনে থাকে, ফলে রয়্যালটি ইনকাম করা যায়।
৬০. Twenty20 (Envato)
ইহা মূলত ফটোগ্রাফারদের জন্য। এখানে রিয়েল-লাইফ ছবি বিক্রির সুযোগ রয়েছে। ব্র্যান্ডগুলো তাদের মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের জন্য বাস্তবধর্মী ছবি খোঁজে এবং এই সাইট থেকে কিনে থাকে।
আরও পড়ুনঃ অনলাইন ইনকাম – অনলাইন আয়ের সেরা ১০টি উপায়
FAQs:
প্রশ্ন ১: কোন কোন সাইট থেকে আসলেই টাকা ইনকাম করা যায়?
উত্তর: জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত সাইটগুলোর মধ্যে রয়েছে Fiverr, Upwork, Freelancer, Swagbucks, Amazon Affiliate, Clickworker ইত্যাদি।
প্রশ্ন ২: এসব সাইট থেকে কি বাংলাদেশে বসে আয় করা সম্ভব?
উত্তর: হ্যাঁ, বাংলাদেশ থেকে ফ্রিল্যান্সিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ডাটা এন্ট্রি কিংবা সার্ভে সাইটে কাজ করে আয় করা যায়।
প্রশ্ন ৩: কোন সাইট থেকে টাকা তুলতে পারবো?
উত্তর: বেশিরভাগ সাইট PayPal, Payoneer বা ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেয়। বাংলাদেশে সাধারণত Payoneer সবচেয়ে জনপ্রিয়।
প্রশ্ন ৪: এসব সাইটে কাজ করতে কি টাকা খরচ করতে হয়?
উত্তর: না, বেশিরভাগ সাইট ফ্রি তে ব্যবহার করা যায়। তবে কিছু সাইটে প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন থাকলেও সেটি বাধ্যতামূলক নয়।
প্রশ্ন ৫: নতুনদের জন্য কোন সাইটগুলো ভালো?
উত্তর: Fiverr, Clickworker, Swagbucks ও Microworkers নতুনদের জন্য সহজ প্ল্যাটফর্ম।
প্রশ্ন ৬: এসব সাইটে কাজ করতে কি অভিজ্ঞতা থাকা দরকার?
উত্তর: সবসময় নয়। কিছু সাইটে দক্ষতা প্রয়োজন (যেমন Fiverr/Upwork), আবার কিছু সাইটে সাধারণ টাস্ক (যেমন সার্ভে বা অ্যাড দেখা) করেই ইনকাম করা যায়।
প্রশ্ন ৭: দিনে কত আয় করা সম্ভব?
উত্তর: এটি নির্ভর করে আপনার স্কিল, সময় এবং প্ল্যাটফর্মের ওপর। কেউ দিনে ৫ ডলার আয় করে, আবার কেউ মাসে হাজার ডলারেরও বেশি আয় করে।
প্রশ্ন ৮: সবচেয়ে নিরাপদ ইনকাম সাইট কোনগুলো?
উত্তর: Fiverr, Upwork, Freelancer, Amazon Affiliate, Swagbucks এর মতো সাইটগুলো বিশ্বস্ত ও নিরাপদ।
প্রশ্ন ৯: এসব সাইট থেকে কি বিকাশে টাকা তোলা যায়?
উত্তর: সরাসরি নয়, তবে Payoneer থেকে স্থানীয় ব্যাংকে টাকা এনে পরে বিকাশে ট্রান্সফার করা যায়।
প্রশ্ন ১০: কতদিনে টাকা ইনকাম শুরু করা যায়?
উত্তর: এটি নির্ভর করে প্ল্যাটফর্ম ও কাজের ধরন অনুযায়ী। কেউ এক সপ্তাহের মধ্যেই আয় শুরু করে, আবার কারো ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগতে পারে।